হযরত সুলতানুল হিন্দ, খাজা গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার শান-মান, বুযূর্গী ও ফযীলত
লিখেছেন: আল ফুরকান ,
আনা সাগরের উভয় তীরে হিন্দুদের ৩৬০টি পৃথক পৃথক পূজারী ব্রাহ্মণ সেবায়েত ও রক্ষক নিযুক্ত ছিল। সবগুলি মন্দিরের প্রায় ১৪/১৫ শত লোক রাজ সরকার হতে নিয়মিত বেতন পেত। সকালে,দ্বিপ্রহরে ও সন্ধ্যায় সবগুলি দেবদেবীর মন্দিরহতে ঢাক, ঢোল, ঘণ্টা ও কাসরের শব্দ উত্থিত হয়ে আজমীর শরীফের আকাশ-বাতাস, কুফরী, শিরকীতে পরিপূর্ণ হত। ঠিক সেই সময়
হযরত সুলতানুল হিন্দ খাজা গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরীদ, মুতাকিদ নিয়ে আনা সাগরের তীরে পাহাড়ের পাদদেশে খানকাহশরীফ স্থাপন করে বসবাস করছিলেন। উনারা প্রত্যেহ পাঁচবার আযান দিয়ে উচ্চ স্বরে তাকবীরের সাথে জামায়াতেনামায আদায় করতে লাগলেন। যার কারণে পূজারী ব্রাহ্মণদের পূজা অর্চনার বিশেষ ব্যঘাত সৃষ্টি হতে লাগলো। একদিন ব্রাহ্মণরা সকলে একত্রিত হয়ে রাজা পৃথ্বিরাজের নিকট গিয়ে অভিযোগ করলো- মহারাজ! এইরাজ্যে আর দেবদেবীর পূজা অর্চনা করা চলবে না। আপনি অনুমতি দিন আমরা পূজা অর্চনা ছেড়ে দেই। রাজা পৃথ্বিরাজ তাদের কথা শুনে বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলো, তোমাদের এরূপ কথা বলার কারণ কী? তোমাদের কী হয়েছে? ব্রাহ্মণরা বললো, হবে আর কী? যখন আমরা মন্দিরে পূজা আরম্ভ করি তখন আরম্ভ হয়েযায় মুসলমানগণের নামায নাউযুবিল্লাহ! আমরা যখনপূজার মন্ত্র পাঠ করতে থাকি তখন তারা চিৎকার করে আযান দিতে থাকে। তাদের সেই আযানে আমাদের প্রত্যেকের পুজার মন্ত্র ভুল হয়ে যায়। মহারাজ! দুঃখের কথা কী বলবো, যদিও তাদের ওই সকল বাক্যের কোন অর্থই আমরা বুঝি না। তবুও কী জানি কেন, ওই সকল শব্দ আমাদের কানে প্রবেশ করলে আমাদের বুকের ভেতর দুরু দুরু করে কেঁপে ওঠে! আমাদের মন্ত্র ভুল হয়ে যায় এবং হাত থেকে শঙ্খ, ঘণ্টা ও পূজার দ্রব্য পড়ে যায়! আপনি যদি এর কোনরূপ প্রতিকার না করেন, তবে পূজা করাই আমাদের পক্ষে অসম্ভব। রাজা পৃথ্বিরাজ ব্রাহ্মণদের অভিযোগ শুনে ক্রোধে গর্জন করে বলে উঠলো- কী, এতদূর স্পর্ধা! আমারই রাজ্যে প্রবেশ করে মুসলমানগণ আমাদের মন্দিরের নিকট আযান দিবে! আমি বর্তমান থাকতেই দেবদেবীর পূজা-অর্চনা বন্ধ হয়ে যাবে? তা কিছুতেই হতে পারে না। তাদেরকে আমি আরবিন্দুমাত্রও প্রশ্রয় দিব না। নাউযুবিল্লাহ। সে তৎক্ষণাত সেনাপতিকে ডেকে বললো, সেনাপতি! তুমি এখনই সৈন্য-সামন্তসজ্জিত করে নিয়ে হয় মুসলমানগণকে হত্যা করবে, না হয় বন্দী করে আমার নিকট পাঠিয়ে দিবে। যদি তাও না পারো তবে তাদেরকে রাজ্য হতে তাড়িয়ে দাও। নাউযুবিল্লাহ! রাজার আদেশে সেনাপতি তখনই সৈন্য নিয়ে হযরত খাজা সুলতানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট গিয়ে বলল, যদি আপনাদের জীবনের প্রতি কিছুমাত্র মায়া-মমতা থেকে থাকে তবে এ মুহূর্তে আজমীর ত্যাগ করে চলে যান। নতুবা আপনাদের একজনেরও দেহে মস্তক থাকবে না। নাউযুবিল্লাহ! সেনাপতির কথায় হযরত সুলতানুল হিন্দ, খাজা গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি অত্যন্তদুঃখিত হলেন, কিন্তু তবুও কিছুমাত্র রাগান্বিত না হয়ে নির্ভীক চিত্তে দৃঢ় কণ্ঠে জবাব দিলেন, “আমরাতোমাদের তর্জন-গর্জনে বিন্দুমাত্র ভীতু নই! আমরা চলে যাওয়ার জন্য এখানে আসিনি। আমরা এখানে থাকলে যদি তোমাদের অসুবিধা হয় তবে তোমরাই অন্যত্র চলে যেতে পারো। তবে জেনে রাখ, তোমার ঐ সকল সৈন্য-সামন্ত বা অস্ত্রশস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আমাদেরকে তাড়াতেপারবে না। যদি আর একটু অগ্রসর হও তবে তোমাদের একজনও প্রাণ নিয়ে ফিরে যেতে পারবে না। জেনে রাখ, তোমাদের ঐ হাতের অস্ত্র হাতেই থেকে যাবে কেউ সেটা ব্যবহার করতে পারবে না।” হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কথায় হিন্দু সেনাপতি ক্রোধান্বিত হয়ে তার সৈন্যদেরকে আক্রমণ করে মুসলমানগণকে শহীদ করার নির্দেশ দিল। নির্দেশ পেয়ে তারা আক্রমণ করতে উদ্যত হলে হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি এক মুষ্টি ধূলি উঠিয়ে তাতে একটা ফুঁ দিয়ে সৈন্যদের দিকে ছুঁড়ে দিলেন। সাথে সাথে ঐ ধূলা সৈন্যদের শরীরে পতিত হলে কেউ অন্ধ, কেউ বধির, কেউ ল্যাংড়া এবং লুলা হয়ে চিৎকার করতে করতে সে স্থান ত্যাগ করেপলায়ন করলো আর কতিপয় সৈন্য অচল হয়ে সে স্থানেই পড়ে আর্তস্বরে চিৎকার করতে আরম্ভ করলো।
হযরত সুলতানুল হিন্দ খাজা গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরীদ, মুতাকিদ নিয়ে আনা সাগরের তীরে পাহাড়ের পাদদেশে খানকাহশরীফ স্থাপন করে বসবাস করছিলেন। উনারা প্রত্যেহ পাঁচবার আযান দিয়ে উচ্চ স্বরে তাকবীরের সাথে জামায়াতেনামায আদায় করতে লাগলেন। যার কারণে পূজারী ব্রাহ্মণদের পূজা অর্চনার বিশেষ ব্যঘাত সৃষ্টি হতে লাগলো। একদিন ব্রাহ্মণরা সকলে একত্রিত হয়ে রাজা পৃথ্বিরাজের নিকট গিয়ে অভিযোগ করলো- মহারাজ! এইরাজ্যে আর দেবদেবীর পূজা অর্চনা করা চলবে না। আপনি অনুমতি দিন আমরা পূজা অর্চনা ছেড়ে দেই। রাজা পৃথ্বিরাজ তাদের কথা শুনে বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলো, তোমাদের এরূপ কথা বলার কারণ কী? তোমাদের কী হয়েছে? ব্রাহ্মণরা বললো, হবে আর কী? যখন আমরা মন্দিরে পূজা আরম্ভ করি তখন আরম্ভ হয়েযায় মুসলমানগণের নামায নাউযুবিল্লাহ! আমরা যখনপূজার মন্ত্র পাঠ করতে থাকি তখন তারা চিৎকার করে আযান দিতে থাকে। তাদের সেই আযানে আমাদের প্রত্যেকের পুজার মন্ত্র ভুল হয়ে যায়। মহারাজ! দুঃখের কথা কী বলবো, যদিও তাদের ওই সকল বাক্যের কোন অর্থই আমরা বুঝি না। তবুও কী জানি কেন, ওই সকল শব্দ আমাদের কানে প্রবেশ করলে আমাদের বুকের ভেতর দুরু দুরু করে কেঁপে ওঠে! আমাদের মন্ত্র ভুল হয়ে যায় এবং হাত থেকে শঙ্খ, ঘণ্টা ও পূজার দ্রব্য পড়ে যায়! আপনি যদি এর কোনরূপ প্রতিকার না করেন, তবে পূজা করাই আমাদের পক্ষে অসম্ভব। রাজা পৃথ্বিরাজ ব্রাহ্মণদের অভিযোগ শুনে ক্রোধে গর্জন করে বলে উঠলো- কী, এতদূর স্পর্ধা! আমারই রাজ্যে প্রবেশ করে মুসলমানগণ আমাদের মন্দিরের নিকট আযান দিবে! আমি বর্তমান থাকতেই দেবদেবীর পূজা-অর্চনা বন্ধ হয়ে যাবে? তা কিছুতেই হতে পারে না। তাদেরকে আমি আরবিন্দুমাত্রও প্রশ্রয় দিব না। নাউযুবিল্লাহ। সে তৎক্ষণাত সেনাপতিকে ডেকে বললো, সেনাপতি! তুমি এখনই সৈন্য-সামন্তসজ্জিত করে নিয়ে হয় মুসলমানগণকে হত্যা করবে, না হয় বন্দী করে আমার নিকট পাঠিয়ে দিবে। যদি তাও না পারো তবে তাদেরকে রাজ্য হতে তাড়িয়ে দাও। নাউযুবিল্লাহ! রাজার আদেশে সেনাপতি তখনই সৈন্য নিয়ে হযরত খাজা সুলতানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট গিয়ে বলল, যদি আপনাদের জীবনের প্রতি কিছুমাত্র মায়া-মমতা থেকে থাকে তবে এ মুহূর্তে আজমীর ত্যাগ করে চলে যান। নতুবা আপনাদের একজনেরও দেহে মস্তক থাকবে না। নাউযুবিল্লাহ! সেনাপতির কথায় হযরত সুলতানুল হিন্দ, খাজা গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি অত্যন্তদুঃখিত হলেন, কিন্তু তবুও কিছুমাত্র রাগান্বিত না হয়ে নির্ভীক চিত্তে দৃঢ় কণ্ঠে জবাব দিলেন, “আমরাতোমাদের তর্জন-গর্জনে বিন্দুমাত্র ভীতু নই! আমরা চলে যাওয়ার জন্য এখানে আসিনি। আমরা এখানে থাকলে যদি তোমাদের অসুবিধা হয় তবে তোমরাই অন্যত্র চলে যেতে পারো। তবে জেনে রাখ, তোমার ঐ সকল সৈন্য-সামন্ত বা অস্ত্রশস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আমাদেরকে তাড়াতেপারবে না। যদি আর একটু অগ্রসর হও তবে তোমাদের একজনও প্রাণ নিয়ে ফিরে যেতে পারবে না। জেনে রাখ, তোমাদের ঐ হাতের অস্ত্র হাতেই থেকে যাবে কেউ সেটা ব্যবহার করতে পারবে না।” হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কথায় হিন্দু সেনাপতি ক্রোধান্বিত হয়ে তার সৈন্যদেরকে আক্রমণ করে মুসলমানগণকে শহীদ করার নির্দেশ দিল। নির্দেশ পেয়ে তারা আক্রমণ করতে উদ্যত হলে হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি এক মুষ্টি ধূলি উঠিয়ে তাতে একটা ফুঁ দিয়ে সৈন্যদের দিকে ছুঁড়ে দিলেন। সাথে সাথে ঐ ধূলা সৈন্যদের শরীরে পতিত হলে কেউ অন্ধ, কেউ বধির, কেউ ল্যাংড়া এবং লুলা হয়ে চিৎকার করতে করতে সে স্থান ত্যাগ করেপলায়ন করলো আর কতিপয় সৈন্য অচল হয়ে সে স্থানেই পড়ে আর্তস্বরে চিৎকার করতে আরম্ভ করলো।