Breaking News
Loading...

Info Post
আমাদের মাঝে অনেক ভন্ড জাহেল মুর্খ মুনাফেক আছে যারা বলে থাকে রাসুল নাকি মারা গেছেন | কিন্তু নবীর শানে একথা বলা চরম বেয়াদবী | আমাদের আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকিদা হচ্ছে-রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) আলমে বরযখে নিজ রওজা মুবারকে সশরীরে জীবিত আছেন। তাইতো কোনো মুসলমান দূর থেকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) -এর প্রতি দরূদ ও সালাম পাঠ করলে সেই ব্যক্তির পক্ষ থেকে তা ফেরেশতার মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) -এর নিকট পৌঁছানো হয় এবং তিনি তাগ্রহণ করেন। এছাড়া কেউ রওযা মুবারকের নিকট এসে সালাত ও সালাম পাঠকরলে তা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) সরাসরি গ্রহণ করেন। এ হায়াতুন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) এর আকিদা ইসলামের দলিল দিয়ে প্রমাণিত। [তথ্যসূত্র: সহিহ মুসলিম, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা-১৭৮/ সুনানু বাইহাকি, হাদিস: ১৫৮৩/ সুনানু দারিমি, হাদিস: ২৭]
নবীগণ রওজায় জীবিত হওয়ার  দলীল ...
১-
ﻭَﻻَ ﺗَﻘُﻮﻟُﻮﺍْ ﻟِﻤَﻦْ ﻳُﻘْﺘَﻞُ ﻓِﻲ ﺳَﺒﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺃَﻣْﻮَﺍﺕٌ ﺑَﻞْ ﺃَﺣْﻴَﺎﺀ
ﻭَﻟَﻜِﻦ ﻻَّ ﺗَﺸْﻌُﺮُﻭﻥَ ) ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ 154- )
আল্লাহর পথে যারা শহীদ হয় তাদের তোমরা মৃত বল না বরং তারা জীবিত।তবে তা তোমরা উপলব্ধি করতে পারো না।{সূরা বাকারা-১৫৪}
উক্ত আয়াতের স্পষ্ট ভাষ্য থেকে প্রতীয়মান হয় যে, শহীদগণ কবরে জীবিত। আর ইংগিতের সাথে একথাও বুঝাচ্ছে যে, নবীগণও কবরে জীবিত। কেননা নবীগণের মর্যাদা শহীদদের তুলনায় অনেক উর্দ্ধে। সুতরাং শহীদগণ যদি কবরে জীবিত থাকেন, তাহলে নবীগণ কেন হবেন মৃত? তারা অবশ্যই জীবিত।

২-
ﻋَﻦ ﺃَﻧَﺲ ؛ ﺃَﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ :
ﺍﻷﻧﺒﻴﺎﺀ ﺃﺣﻴﺎﺀ ﻓﻲ ﻗﺒﻮﺭﻫﻢ ﻳﺼﻠﻮﻥ ) ﻣﺴﻨﺪ ﺍﻟﺒﺰﺍﺭ- ﻣﺴﻨﺪ ﺃﺑﻲ ﺣﻤﺰﺓ ﺃﻧﺲ ﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ، ﺭﻗﻢ
ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ 6888- )

হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- নবীরা কবরে জীবিত। আর তারা সেখানে নামায পড়েন।{মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৬৮৮৮, মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৩৪২৫, সহীহ কুনুযুস সুন্নাতির নববিয়্যাহ, হাদীস নং-২২}
তবে সেটা বারযাখী জীবন, যা মানুষের জ্ঞানের বাইরে। ঐ ছালাত দুনিয়াবী ছালাতের সাথে তুলনীয় নয়।

৩-
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺍﻟﺪﺭﺩﺍﺀ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﺳﻠﻢ ) ﺃﻛﺜﺮﻭﺍ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻋﻠﻲ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ . ﻓﺈﻧﻪ ﻣﺸﻬﻮﺩ
ﺗﺸﻬﺪﻩ ﺍﻟﻤﻼﺋﻜﺔ . ﻭﺇﻥ ﺃﺣﺪﺍ ﻟﻦ ﻳﺼﻠﻲ ﻋﻠﻲ ﺇﻻ ﻋﺮﺿﺖ
ﻋﻠﻲ ﺻﻼﺗﻪ ﺣﺘﻰ ﻳﻔﺮﻍ ﻣﻨﻬﺎ ( ﻗﺎﻝ ﻗﻠﺖ ﻭﺑﻌﺪ ﺍﻟﻤﻮﺕ ؟
ﻗﺎﻝ ) ﻭﺑﻌﺪ ﺍﻟﻤﻮﺕ . ﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺣﺮﻡ ﻋﻠﻰ ﺍﻷﺭﺽ ﺃﻥ ﺗﺄﻛﻞ
ﺃﺟﺴﺎﺩ ﺍﻷﻧﺒﻴﺎﺀ )ﺳﻨﻦ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺠﻨﺎﺋﺰ ، ﺑﺎﺏ ﺫﻛﺮ
ﻭﻓﺎﺗﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﺳﻠﻢ، ﺭﻗﻢ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ১৬৩৭
হযরত আবু দারদা হতে বর্ণিত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-তোমরা জুমআর দিন বেশি বেশি করে দুরুদ পড়।
নিশ্চয় ফেরেস্তারা এর উপর স্বাক্ষী থাকে। আর যখন কেউ আমার উপর দুরুদ পড়ে তখনই তা আমার নিকট পেশ করা হয়।
আবু দারদা রাঃ বলেন-আমি জিজ্ঞাসা করলাম-মৃত্যুর পরেও কি তা পেশ করা হবে? উত্তরে তিনি বললেন-হ্যাঁ!,
কেননা আল্লাহ তায়ালা জমিনের জন্য নবীদের দেহ ভক্ষণ করা হারাম করে দিয়েছেন।
{ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৬৩৭, ১৬৩৬, সুনানুস সাগীর লিল বায়হাকী, হাদীস নং-৪৬৯, আল মুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৪৭৮০, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-১৫৭২, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৩৪৮৫, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৫৭৫৯}
এ হাদীস সুষ্পষ্ট প্রমাণ করে যে, নবীগণ কবরে জীবিত।

হযরত আম্বিয়া কেরাম আলাইহিমুস সালাম এর কবরের জীবন হুবহু জীবিত থাকা সত্য ও হক্ব। ইমাম বাইহাকী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এ বিষয় বস্তুর উপর একটি সহীহ হাদিস বর্ণনা করেছেন। হাফেজ ইবনে হাজার (রহ) ফতহুল বারী ৬:৩৫২ এবং হাফেজ সাখাবী আলাকওলুল বদী'-১১৬-এ উক্ত হাদিসকে বিশুদ্ধ সনদ বিশিষ্ট বলেছেন ।
এছাড়া আল্লামা সাখাবী(রহ) লিখেন যে-
আমরা ঈমান রাখি সত্যায়ন করি যে, হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরে জীবিত এবং তাঁকে রিযিক দেয়া হয় এবং তাঁর শরীর মোবারক কে মাটি খায়না অর্থাৎ নষ্ট করে না। আর এর উপর উম্মতের ইজমা এবং ইত্তেফাক। (আলকওলুল বদী'- ১২৫)

মুল্লা আলী ক্বারী (রহ) তাঁর কিতাব ﺍﻟﺪﺭﺓ ِ ﺍﻟﻤﻀٔﻴﺔ
ﻓﻲ ِ ﺍﻟﺰﻳﺎﺭﺓ ﺍﻟﻤﺼﻄﻔﻮﻳﺔ তে লিখেন-"নবিজীর কবর জিয়ারাতের ফায়েদা সমূহের মাঝে সবচেয়ে বড় ফায়েদা এই যে, যখন যিয়ারাতকারী হুজুরের কবরের নিকট দুরুদ ও সালাম পাঠ করে তখন তিনি তা যথাযথভাবে তা শুনেন ও তার জবাব দেন কোন প্রকার মাধ্যম (ফেরতেশতা ) ছাড়া, তার বিপরীতে যখন কোন ব্যাক্তি দূর হতে দুরূদ ও সালাম পাঁঠ করে ,তখন ফেরেশতার মাধ্যমে তা হুজুরের নিকট পৌঁছানো হয়। ( এ আকিদার কারণ ) এজন্য যে, মজবুত সনদে এসেছে (হুজুর বলেন) যে আমার কবরের নিকট দুরূদ পড়ে আমি তা সরাসরি শুনি, আর যে দূর হতে দুরূদ পড়ে ,তা আমার নিকট পৌঁছে দেয়া হয়।"

উপরের মুল্লা আলী ক্বারী (রহ) যে হাদিস বর্ণনা করেছেন যেখানে ﻣﻦ ﺻﻠّﻲ ﻋﻨﺪ ﻗﺒﺮﺉ আছে তা আবুশ শায়খ এর সনদে সহীহ। এই হাদিসে মুহাম্মাদ বিন মারওয়ান সুদ্দী নেই।
এই প্রসঙ্গেই হাফেজ ইবনে হাজার আস্কালানী (রহ) বলেন যে, ﺑﺴﻨﺪ ﺟﻴِّﺪ পোক্তা সনদে বর্ণিত (ফতহুল বারী ৬: ৩৫২) এবং উক্ত সনদকে আল্লামা সাখাবী (রহ) ﻭﺳﻨﺪﻩ ﺟﻴِّﺪ -এর সনদ মজবুত লিখেছেন। (আল কওলুল বদী-১১৬)
এবং আহলে হাদিস আলেম নওয়াব সিদ্দীক খান লিখেন ﺍﺳﻨﺎﺩ
ﺟﻴِّﺪ -বর্ণনা সূত্র উত্তম (আদদলীলুত ত্বালেব-৮৪৪)

এবং অধিক সম্ভাব্য যে, এর উপরই ইবনে তাইমিয়া এই মাসয়ালার বুনিয়াদ রেখে লিখেন যে,
ﻓﺎﺧﺒﺮﺍﻧّﻪ ﻯﺴﻤﻊ ﺍﺻﻠﻮﺓ ﻭﺍﺳّﻼﻡ ﻣﻦ ﺍﻟﻘﺮﻯﺐ ﻭﺍﻧّﻪ ﻯﺒﻠﻎ
ﺫﺍﻟﻚ ﻣﻦ ﺑﻌﺪ ) ﻣﻨﺎ ﺳﻚ ﻟﺠﺠﻊ ٨٤ )
অর্থাৎ,হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংবাদ দিয়েছেন যে, তিনি নিকটবর্তী থেকে নিজেই দুরূদ ও সালাম শুনতে পান। আর দূর থেকে হুজুরের নিকট দুরূদ ও সালাম পৌঁছানো হয়।

ইবনুল কাইয়ুম লিখেন যে-"যদিও হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রূহ মোবারক হযরত আম্বীয়ায়ে কেরাম আলাইহিমুস সালাম-এর রূহের সাথে রফীকে আলায় এ রয়েছেন,কিন্তু এতদ্বসত্বেও তাঁর রূহ মোবারক তাঁর শরীর মোবারকের সাথে সম্পর্ক রয়েছে,যে কারণে তিনি সালাম দাতার উত্তর দিয়ে থাকেন। ( যাদুল মা'আদ খঃ ২, পৃঃ ৪৯)

রুহুল আয়ানীর লেখক তার কিতাবের ২২ঃ৩৬ এবং আল্লামা সবকী (রহ) শিফাউস সিকাম-১৪৩ এ বর্ণনা করেন যে, এই কবরের জীবন সমস্ত আহকামের ক্ষেত্রে দুনিয়াবী জীবনের মত নয় এবং সব দুনায়াবী আহকাম
তার উপর বিন্যস্ত হয় না যে, এরকম বলা- যেমন দুনায়াবী খাওয়া ও পান করার প্রয়োজন ছিল,কবরেও এরকম হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। বরং তিনি বলেন যে, ঐ জীবন ইলম তথা জানা ও শ্রবন করা ইত্যাদি অর্জনের ক্ষেত্রে দুনিয়াবী জীবনের মত এবং এ সম্পর্কেই আল্লাম সুবকী (রহ) ও অন্যান্যগণ বলেন-
ﻓﻼ ﺷﻚّ ﺍﻥّ ﺫﻟﻚ ﺛﺎﺑﺖ )ﺷﻔﺎﺀ ﺍﻟﺴﻘﺎﻡ ١٤٣: )

যারা কবরের হযরত আম্বিয়া কেরাম আলাইহিমুস সালাম-এর জিবীত থাকার মত পোষণ করেন,তাদের উদ্দেশ্যও দুনিয়াবী জীবন থেকে শুধু এতটুকু জীবন যে, কবরের পাশে সালাত ও সালামম শুনতে পান এবং শরীর মোবারকের সাথে রূহ মোবারকের গভীর(শক্ত) সম্পর্ক বিদ্যমান,তাদের উদ্দেশ্য দুনিয়ার এই ধ্বংশশীল ও নিকৃষ্ট জীবন এবং পাবন্দী ও কষ্টের কখনই নয়। কোরানুল কারিমের কিছু কিছু আয়াত দ্বারা একথা অকাট্যভাবে প্রমাণিত যে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এ দুনিয়া থেকে ওফাত হয়েছে,কিন্তু এরপর উন্নত ও উত্তম জীবন কবরে আল্লাহ তা'আলা তাঁকে দিয়েছেন (যেমনটি নাকি তিনি স্তরভেদে শহীদ,সাধারণ মুমীন এবং কাফের ও গুনাহগারদেরকে স্থান দিয়ে থাকেন) তা সত্য ও প্রমাণিত। কোন সহীহ আকলী অথবা নকলী (যৌক্তিক কিংবা বর্ণিত) দলীল দ্বারা তার অস্বীকৃতি সাব্যস্ত নেই।
এটাই আকাবেরে দেওবন্দ এর আক্বীদা। ( আল্মুহান্নিদ আলাল মুসান্নিফ-১৩) ৭৪/ মুসনাদে আহমদ, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা-১৫৬]