(১) খলীফাতুর রাসুলুল্লাহ হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু বলেন - “যে ব্যক্তি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-এর মীলাদ শরীফ পাঠ (মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
উপলক্ষ্যে এক দিরহাম ব্যয় করবে সে জান্নাতে আমার বন্ধু হয়ে থাকবে।” (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি’মাতুল কুবরা)
(২) আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু বলেন - “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামকে (বিলাদত দিবসকে)বিশেষ মর্যাদা দিল
সে মূলতঃ ইসলামকেই পূনরুজ্জীবিত করল।“ (সুবহানাল্লাহ্)(আন্
নি’মাতুল কুবরা)
(৩) আমীরুল মু’মিনীন হযরত ওসমান রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু বলেন - “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে এক দিরহাম খরচ করল সে যেন বদর ও হুনায়েন যুদ্ধে
শরীক থাকল।” (সুবহানাল্লাহ্)(আন্ নি’মাতুল কুবরা)
(৪) আমীরুল মু’মিনীন হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু বলেন - “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি বিশেষ মর্যাদা প্রদান করল সে ব্যক্তি অবশ্যই ঈমান নিয়ে দুনিয়া
থেকে বিদায় নিবে এবং বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (আন্ নি’মাতুল কুবরা)
জগৎখ্যাত,
সর্বজনমান্য, সকলের নিকট অনুসরণীয় হযরত
আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের দৃষ্টিতে সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, ঈদে আকবর, পবিত্র
ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গুরুত্ব ও ফযীলত
(১) হযরত ইমাম হাসান বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন - “আমার একান্ত ইচ্ছা হয় যে, আমার যদি ওহুদ
পাহাড় পরিমান স্বর্ণ থাকত তাহলে তা ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উপলক্ষ্যে ব্যয় করতাম। (সুবহানাল্লাহ্)
(আন্ নেয়ামাতুল কুবরা)
(২) হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন - “যে ব্যক্তি মীলাদ শরীফ পাঠ বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উদযাপন উপলক্ষ্যে লোকজন একত্রিত করলো এবং খাদ্য তৈরি করলো ও জায়গা
নির্দিষ্ট করলো এবং মীলাদ পাঠের জন্য উত্তম ভাবে (তথা সুন্নাহ ভিত্তিক) আমল করলো তাহলে
উক্ত ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক হাশরের দিন সিদ্দীক শহীদ, সালেহীনগণের
সাথে উঠাবেন এবং তাঁর ঠিকানা হবে জান্নাতে নাঈমে।” (সুবহানাল্লাহ্)
(আন্ নেয়ামাতুল কুবরা)
(৩) হযরত মারুফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন - “যে ব্যক্তি ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে
খাদ্যের আয়োজন করে, অতঃপর লোকজনকে জমা করে, মজলিশে আলোর ব্যবস্থা করে,পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন
নতুন লেবাস পরিধান করে, মীলাদুন্নবীর তাজিমার্থে সু-ঘ্রাণ
ও সুগন্ধি ব্যবহার করে। আল্লাহ পাক তাকে নবী আলাইহিমুস্ সালামগণের প্রথম কাতারে
হাশর করাবেন এবং সে জান্নাতের সুউচ্চ মাকামে অধিষ্ঠিত হবে।“ (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নেয়ামাতুল কুবরা)
(৪) হযরত ইমাম সাররী
সাক্বত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন - “যে ব্যক্তি মীলাদ
শরীফ পাঠ বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করার জন্য স্থান
নির্দিষ্ট করল সে যেন তার জন্য জান্নাতে রওজা বা বাগান নিদিষ্ট করলো। কেননা সে তা
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুহব্বতের জন্যই করেছে। আর আল্লাহ্
পাক-এর রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসবে সে
আমার সাথেই জান্নাতে থাকবে।” (তিরমিযি, মিশকাত, আন নেয়ামাতুল কুবরা)
(৫) সাইয়্যিদুত
ত্বয়িফা হযরত জুনাইদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন - “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আয়োজনে উপস্থিত
হল এবং উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করলো। সে তার ঈমানের দ্বারা সাফল্য লাভ করবে
অর্থাৎ সে বেহেশ্তি হবে।” (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি’মাতুল কুবরা)
(৬)হযরত ইমাম
ফখরুদ্দীন রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন - “যে ব্যক্তি
মিলাদ শরীফ পাঠ করে বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করে,
লবণ, গম বা অন্য কোন খাদ্য দ্রব্যের উপর
ফুঁক দেয়, তাহলে এই খাদ্য দ্রব্যে অবশ্যই বরকত প্রকাশ
পাবে। এভাবে যে কোন কিছুর উপরই পাঠ করুক না কেন। (তাতে বরকত হবেই)”। (সুবহানাল্লাহ্)
(আন্ নি’মাতুল কুবরা)
(৭) হযরত ইমাম রাযী
রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন - উক্ত মোবারক খাদ্য মীলাদ পাঠকারীর বা মীলাদুন্নবী
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনকারীর জন্য আল্লাহ পাকের নিকট ক্ষমা
প্রার্থনা করে, এমনকি তাকে ক্ষমা না করা পর্যন্ত সে
ক্ষান্ত হয়না। (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি’মাতুল কুবরা)
(৮) হযরত ইমাম রাযী রহমতুল্লাহি
আলাইহি আরো বলেন - যদি মীলাদ শরীফ পাঠ করে বা মীলাদুন্নবী
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করে কোন পানিতে ফুঁক দেয়, অতঃপর উক্ত পানি কেউ পান করে তাহলে তার অন্তরে এক হাজার নূর ও রহমত
প্রবেশ করবে। আর তার থেকে হাজারটি বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ রোগ দূর হবে। যে দিন সমস্ত
ক্বলব (মানুষ) মৃত্যুবরণ করবে সেদিনও ঐ মীলাদুন্নবীর পানি পানকারী ব্যক্তির অন্তর
ম”ত্যু বরণ করবে না। (সুবহানাল্লাহ্)
(আন্ নি’মাতুল কুবরা)
(৯) হযরত ইমাম রাযী রহমতুল্লাহি
আলাইহি আরো বলেন - যে ব্যক্তি মীলাদ শরীফ পাঠ করে বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদ্্যাপন করে রৌপ্যের অথবা স্বর্ণের দেরহামসমূহের উপর ফুঁক
দেয় অতঃপর তা অন্য জাতীয় মুদ্রার সাথে মিশায় তাহলে তাতে অবশ্যই বরকত হবে। এবং
এর পাঠক কখনই ফকীর হবে না। আর উক্ত পাঠকের হাত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর (মীলাদ পাঠের) বরকতে কখনও খালি হবে না।
(সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি’য়ামাতুল কুবরা)
(১০) হযরত
জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন - যে স্থানে বা মসজিদে অথবা মহল্লায়
মীলাদ শরীফ পাঠ করা হয় বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদ্্যাপন
করা হয় সেখানে অবশ্যই আল্লাহ পাকের ফেরেস্তাগণ বেষ্টন করে নেন। আর তাঁরা সে
স্থানের অধিবাসী গণের উপর ছলাত-সালাম পাঠ করতে থাকেন। আর আল্লাহ পাক তাদেরকে
স্বীয় রহমত ও সন্তুষ্টির আওতাভুক্ত করে নেন। আর নূর দ্বারা সজ্জিত প্রধান চার
ফেরেস্তা, অর্থাৎ হযরত জিব্রাইল, মীকাইল, ইসরাফিল ও আযরাইল আলাইহিমুস্্
সালামগণ মীলাদ শরীফ পাঠকারীর উপর বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনকারীর
উপর সালাত-সালাম পাঠ করেন। (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি’মাতুল
কুবরা) (
১১) ইমাম
জালালুদ্দীন সূয়ুতী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন - “যখন কোন মুসলমান নিজ বাড়ীতে মীলাদ শরীফ পাঠ করে তখন সেই বাড়ীর অধিবাসীগণের
উপর থেকে আল্লাহ্ পাক অবশ্যই খাদ্যাভাব, মহামারী,
অগ্নিকাণ্ড, ডুবে মরা,বালা মুসিবত, হিংসা-বিদ্বেষ, কু-দৃষ্টি, চুরি ইত্যাদি উঠিয়ে নেন। যখন উক্ত
ব্যক্তি মারা যান তখন আল্লাহ পাক তাঁর জন্য মুনকীর -নকীরের সুওয়াল-জাওয়াব সহজ
করে দেন। আর তাঁর অবস্থান হয় আল্লাহ্ পাক-এর সন্নিধানে সিদকের মাকামে।
(সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নেয়ামাতুল কুবরা)